Sharing is caring!
স্টাফ রিপোর্টার
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত বাঁধের প্রায় ৬৫ মিটার এলাকা ধসে গেছে। বলে জানান সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান। রাতেই খবর পেয়ে কাজিপুর সেনাক্যাম্পের সদস্যগণ ওই ধস ঠেকাতে বালিভর্তি জিওব্যাগ ফেলা কাজ শুরু করে। এদিকে শুষ্ক মৌসুমে বাঁধ ধসের ঘটনায় নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নতুন মেঘাই গ্রামের আব্দুল খালেক (৬৮) ও জামিল (৬১) জানায়, যেভাবে বাঁধ ভাঙ্গছে তাতে আমার বাড়িও ভাঙ্গবে। এবার যদি বাড়ি ভাঙ্গে তা হলে গাছতলা থাকা ছাড়া আমার কোন পথ থাকবে না। ইতিপূর্বেও আমরা তিন তিন বার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছি। জামি ও বাড়ি হারিয়ে এখন আমরা দিন মজুরের কাজ করে খাই। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা হাছিনা, মাজেদ ও আছাতন বলেন, ‘একাধিকবার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে আমরা এখানে আশ্রয় নিয়েছিলাম। জমিজমা সব কিছু হারিয়েছি। মাথা গোজার ঠাইটাও যদি হারাই তা হলে আমাদের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করা ছাড়া কোন পথ থাকবে না। এলাকাবাসীর অভিযোগ কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন ও নদীর তীরে একাধিক স্থানে বালুর স্তূপ করে রাখার কারণে নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। খুব দ্রুত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও ভাঙ্গন রোধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দাবি জানান। ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে কাজিপুর সেনা ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ক্যাম্প কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. শরিফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাধারণ মানুষও বাঁধের ধস ঠেকাতে জিওব্যাগে বালি ভর্তি ও ফেলার কাজ করছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী (এসও) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সংবাদ পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে আসি। পরে সেনাসদস্যদের সহায়তায় ভাঙন ঠেকাতে শনিবার প্রায় ৬৫০ টি বালিভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মূলত বাঁধের প্রায় দুইশ মিটার নদীর অভ্যন্তরে বিশাল চর জেগে উঠেছে। ফলে নদীর স্রোত এসে সরাসরি তীরে আছড়ে পড়ছে। এর ফলে এই ধসের সৃষ্টি হয়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ধস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাবরিন আক্তার বলেন, বাঁধের ধসের খবর পেয়ে আমি এলাকা পরিদর্শন করেছি। ধস ঠেকানোর জন্য ইতিমধ্যেই বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। বর্তমানে ধ্বস নিয়ন্ত্রণে আছে। এলাকাবাসীর আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। পরবর্তীতে ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।